শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রায় তিন বছর চাইবাসায় সমীর রায়চৌধুরীর সঙ্গে ছিলেন । সমীর যখন ট্যুরে যেতেন তখন শক্তিকে মধুটোলানিবাসী সুধীর চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে অতিথি হিসাবে রেখে যেতেন । শক্তি সুধীরবাবুর মেয়ে শীলার প্রেমে পড়েন এবং উপন্যাস লেখা ছেড়ে দিয়ে কবিতা লেখা আরম্ভ করেন । সবই প্রেমের কবিতা, শীলাকে উদ্দেশ্য করে লেখা । প্রচুর কবিতা লিখতেন পপতিদিন এবং সেগুলো শীলাকে শোনাতেন । শীলা কলেজে গেলে শক্তি প্রতিদিন ফেরার পথে অপেক্ষা করতেন ।
শক্তি বিয়ে করতে চেয়েছিলেন শীলাকে । কিন্তু সুধীরবাবু অনুমোদন করেননি । তার কারণ শক্তি তখন বেকার ছিলেন এবং প্রতিদিন মহুয়ার মদ খেতেন । শীলাকে শক্তির প্রভাব থেকে দূরে রাখার জন্য সুধীরবাবু শীলাকে পাটনায় মলয় রায়চৌধুরীদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন । শীলা পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর করেন ।
শক্তি সন্দেহ করেছিলেন যে শীলার সঙ্গে তাঁর বিয়েতে বাগড়া দিয়েছেন সমীর ও মলয় । এই ঘটনায় তিনি এতোই মর্মাহত হন যে হাংরি আন্দোলন ত্যাগ করেন। ক্রোধে তিনি হাংরি মামলায় আদালতে মলয়ের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন । তাঁর ও শৈলেশ্বর ঘোষ ও সুভাষ ঘোষের সাক্ষ্যের কারণে মলয় রায়চৌধুরীর একমাসের কারাদণ্ড হয় ।
মীনাক্ষী বিশ্বাসকে বিয়ে করার পর সমীর ও মলয়ের সঙ্গে শক্তির সম্পর্কে স্বাভাবিক হলেও আগের সেই বিশ্বাসনির্ভর সম্পর্ক ছিল না ।
শীলার বিয়ের পরও শক্তি তাঁর বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিলেন এবং শীলার স্বামী সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলে এসেছিলেন শীলাকে যত্নে-ভালোবাসায় রাখতে । একটি পুত্র হবার পরই এক দুর্ঘটনায় সৌমেন মারা যান । শীলার অকাল-বৈধব্য সহ্য করতে পারেননি শক্তি চট্টোপাধ্যায় এবং তাও প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর কবিতায় ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন