হাংরি আন্দোলনের মুল্যায়ন সমকালে হয় নি !অথচ ওদের গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরার তত্ত্ব প্রয়োগ করে এ
রাজ্যের বাম সরকার তিন দশকের বেশি কাল শাসন করে গেছে ..এমনকি আজকের সরকারও
গ্রাম কেন্দ্রীক প্রকল্প ....কন্যাশ্রী ,যুবশ্রী ..শিক্ষাশ্রী. লাখ লাখ
সাইকেল প্রদানের মত মিশন নিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রে বসে আছেন ..কিন্তু বড়লোকদের
সরিয়ে গ্রামের হত দরিদ্র মানুষদের নিয়ে নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিল ওই
সব তরুণরা ....সমরেশ মজুমদারের গর্ভধারিনী কালবেলার মত লেখা পড়লেই বোঝা যায়
...একই ভাবে বাংলা সাহিত্যের এক বিশেষ কালে বিশেষ কারণে হাংরি জেনারেশন
আন্দোলনের পথ চলা শুরু হয়েছিল,সাহিত্য তখন প্রতিষ্ঠানের কবলে..ওরাই ঠিক করে
দিত সাহিত্যের মানদন্ড...যেমন এখনো বিশেষ পত্রিকায় লেখা না ছাপলে প্রকৃত
কবি হওয়া যায় না.তারাই প্রজেক্ট করে লেখক তৈরী করেন ..পুরস্কার দেন
..কিন্তু জীবনানন্দ কিম্বা জগদীশ গুপ্ত তাদের জীবিত কালে সম্মান পান নি
.আসলে তাদের কালের বড় অংশের তথাকথিত পাঠক তাদের বুঝতে পারেন নি ..অনেক পরে
ওই সব মানুষের মুল্যায়ন হয়েছে ...হচ্ছে ..হাংরি দেরও তাদের কাল তাদের দূরে
ঠেলে রেখেছিল ...এর অনেক কারণের একটি অশ্লীলতা ...কিন্তু কুত্সিতের ভেতর
সুন্দরকে খুঁজে পায় না সুদর্শনারা ..তারা সুবর্ণকেই আসল মনে করে ..হাংরিদের
লেখার বিচার করার ক্ষমতা সমকালের রাষ্ট্রযন্ত্রের ..স্তাবকদের ছিল না .ফলে
হাংরিরা পুলিশী জুলুমের শিকার হয়েছিল ..কেউ কেউ পালিয়ে কেউবা মুচলেকা দিয়ে
পোশাক বদল করেছে .সুনাম যশ পেয়েছে .সময়ের তালে আবার এই সব গিরগিটিরা রং
বদল করে নিয়েছে কেউ ..যে অশ্লীলতার দোহাই দেওয়া হত তা তো এখন মিডিয়ার
কল্যানে ঘরে বসেই সপরিবারে উপভোগ করি ..আমার বারো বছরের ছেলে জাপানী তেলের
সীন দেখে ওর মাকে বলে ...আসলে না বুঝে বলে ওই তেল পুরুষের জন্য ...আরো
হাজারো নগ্ন শরীরের বিজ্ঞাপন দেখি ..উপভোগ করি ..ইন্টারনেটের দ্বারা হট সীন
এনজয় করি ..কিন্তু হাংরিদের লেখাতে সাহিত্য মূল্য পাই না .হাংরি কবি
অরুনেশ ঘোষ যখন তাঁর শেষ কাব্য পশুরাও অন্তর্লীন হাসে কাব্যের একটি কবিতায়
লেখেন ........মানচিত্রে তোমার দেশ ,মাথা উঁচু মৃত এক ডাইনোসরের কংকাল
......এসব লাইন কালের গন্ডী অতিক্রম করে যায় ...তাইতো হাংরিদের নতুন করে
মুল্যা য়নের সময় এসেছে ...ওদের কোনো মুখোশ নেই ....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন