বুধবার

বিনয় মজুমদারের হাংরি কবিতা

বসার পরে

বসা শেষ হয়ে গেলে দেখা যায় ভুট্টা অতি সামান্যই নরম হয়েছে ।
নদী সোজা উঠে পড়ে, তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি গ্লাসের বাহিরে
রস লেগে আছে কিনা, নদী তার হাত দিয়ে আমার ভুট্টাটি
তখন -- বসার শেষে ককনো ধরে না, ভুট্টা রসে ভেজা থাকে ।
আমি কিন্তু হাত দিই, ঘাসের উপরে হাত বোলাতেই থাকি,
ঘাস টেনে টেনে দেখি, অনেক অশ্লীল কথা অনায়াসে বলি ।
নদীর গ্লাসের দৃশ্য -- গ্লাসের বাহিরটিকে প্রাণ ভরে দেখি
( গ্লাসের ভিতরে দেখি বসার সময় শুধু ) বসা শেষ হলে
গ্লাস খুলে দেখতে সে এখনো দেয়নি আমি বহির্ভাগ দেখি ।
হঠাৎ বেলের দিকে চোখ পড়ে, মুগ্ধ হয়ে যাই ।
বেল দুটি এ বয়সে অল্পপরিমাণ ঝুলে পড়েছে, সে দুটি
মনোমুগ্ধকর তবু চোখ ফের নেমে আসে নিচের গ্লাসের দিকে, সেই
গ্লাসের উপরিভাগ বসার সময়ে যতো দেখেছি
এখন এতটা নয়, সরু হয়ে পড়েছে, তা ঘাসগুলি ঘন হয়ে পড়েছে এখন ।

যৌবন কাহিনী

এখন ফুলকে খাই প্রায়শই কলকাতা গিয়ে ।
কয়েক বছর ধরে খাওয়া হলো, ছেলেও হয়েছে ।
আরো ছেলে মেয়ে চাই -- এই কথা ফুলকে বলেছি,
খাওয়ার সময়ে আমি ধাক্কা দিতে দিতে এই কথাই বলেছি ।
ফুল তাতে রাজি আছে, এই ভাবে দুজনের জীবন চলেছে ।
ফুলের ঘরের পাশে আরো বহু ঘর আছে, প্রতিটি ঘরেই
নদী আছে, তারা সব আমার খাওয়ায় খুব সহযোগীতাই
করে থাকে, সর্বদাই ফুল যেই বলে ‘আজ একবার বসি’
অমনি সে নদীদের একজন জল এনে দেয় ।
আমরা খেওয়ার পরে সেই জলে কলা গুহা ধুই ।
আমি গেলে মাঝে মাঝে তাদের ভিতরে কেউ জিজ্ঞাসাও করে
‘আজ তুমি বসবে কি’ এইসব পরস্পর খাওয়ায় সহযোগীতা করে
সেখানে -- আমার ফুল যেখানে রয়েছে সেই বাড়িটিতে
নদী আছে, প্রতিবার খাওয়ার পরেই ভাবি তারা সব দেবী ।

ভারতীয় গণিত

ক্যালকুলাসের এক সত্য আমি লিপিবদ্ধ করি ।
যে কোনো ফাংকশানের এনেথ ডেরিভেটিভে এন
সমান বিয়োগ এক বসিয়ে দিলেই
সেই ফাংকশানটির ফার্স্ট ইন্টিগ্রেশনের ফল পাওয়া যায়

এনেথ ডেরিভেটিভে এন
সমান বিয়োগ দুই বসিয়ে দিলেই
সেই ফাংকশানটির সেকেণ্ড ইন্টিগ্রেশন হয়--
এনেথ ডেরিভেটিভ এন
সমান বিয়োগ তিন বসিয়ে দিলেই
সেই ফাংকশানটির থার্ড ইন্টিগ্রেশনের ফল পাওয়া যায়

এই ভাবে সহজেই যে কোনো অর্থাৎ
দশম বা শততম অথবা সহস্রতম ইন্টিগ্রেশনের
ফল অতি সহজেই পাই ।
এই কবিতায় লেখা পদ্ধতির আবিষ্কর্তা আমি
বিনয় মজুমদার । আমার পত্নীর নাম রাধা
আর
আমার পুত্রের নাম কেলো ।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন