মঙ্গলবার

জুন নন্দী আলোচনা করেছেন মলয় রায়চৌধুরীর কবিতা "জখম"

জুন নন্দী : মলয় রায়চৌধুরীর ‘জখম’

চাঁদোয়ায় আগুন লাগিয়ে তার নীচে শুয়ে আকাশের উড়ন্ত নীল দেখছি এখন
দুঃখ-কষ্টের শুনানী মুলতুবি রেখে আমি আমার সমস্ত সন্দেহকে জেরা করে নিচ্ছি
হাতের রেখার ওপর দিয়ে গ্রামোফোনের পিন চালিয়ে জেনে নিচ্ছি আমার ভবিষ্যত

এই এপিক কবিতার পুনঃ-পুনঃপাঠের পর আমি নিশ্চিত হয়েছি যে কিছু-কিছু সৃজনশীল কাজ মানুষের চরম প্রতিক্রিয়ার অতীত, তা সে একটি গোষ্ঠীর অবক্ষয়ী নিন্দা হোক অথবা অপর এক যুগের সীমাহীন বন্দনার সঙ্গে তার তুলনা করা হোক, তার কারণ বিষয়টা দুই মেরুর মধ্যবর্তী কোথাও দোদুল্যমান নয়, বরং তা পাঠক সম্প্রদায়ের অবরুদ্ধ উপলব্ধির উর্ধ্বে ।

উপরের পঙক্তিগুলো প্রথমবার পাঠ করলে দেখা যায় ‘আমি’ দ্রুত উচ্চারিত হয়েছে, কিন্তু ঐ ‘আমি’ নিজের জন্য আরামপ্রদ অহংকার দাবি করছে না ; বরং আত্মসন্দেহকে জেরা করতে চাইছে; ব্যক্তিগত যন্ত্রণাকে একপাশে সরিয়ে রেখে দেখতে চাইছে ডানা মেলে দেয়া নীলাকাশকে — সেই আকাশ, যা তার অপরিমেয় চারিত্রে সীমাহীন ভিশান যোগায় এবং যা পরিব্যপ্ত । ভবিষ্যৎবাণীদের যাচাই করার উদ্দেশ্যে ঐ ‘আমি’ আকাশের দূষিত নক্ষত্রের মাঝে সদুত্তরের অন্বেষনে ব্যপৃত ; এবং পাঠকবর্গ ততক্ষণে অনুধাবন করতে পারেন যে ঐ ‘আমি’ তাদের মাঝে প্রবেশ করে নিজের গান গাইবার জন্য আবির্ভুত হয়নি, বরং তা প্রতিটি আঘাতপ্রাপ্ত জখম মানুষকে, যে ডেবিট-ক্রেডিট-হাতঘড়ি পরা ভুতুড়ে গড্ডলিকার অংশ হতে অস্বীকার করে, তাকে  আমাদের সামনে তুলে ধরতে চাইছে ।

বুকের বাঁদিকের আর্মেচার পুড়ে গেছে বহুকাল
এখন চোখ জ্বালা কোর্ছে  মলয়ে কঙ্কাল জ্বালানো ধোঁয়ায়
আশপাশ দিয়ে ঘণ্টায় ৯৯ কিলোমিটার দরে উড়ে যাচ্ছে বদমতলব ঝড়
কব্জিতে ঘড়ির কাঁটা রেখে চলে যাচ্ছে সারসার সমদ্বিঠ্যাঙ মানুষের লাভলোক্সানময় দল
১টা চামচিকে অনেক নিচু দিয়ে উড়ে আমাকে ভয় দেখাচ্ছে
ওদিকে ফাঁকা মাঠের মধ্যে সাজানো রয়েছে  হাট কোরে খোলা ৮০০০০০ কাঠের দরোজা
আমার সামনের সমস্ত দৃশ্য ধেবড়ে গেছে দেখতে পাচ্ছি
কারুর সঙ্গে খাপ খাচ্ছে না আমার
আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে
আমার জিভ আমার ভাষা ভুলে যাচ্ছে
১৬ ডিভিশন কাক আমার হাত-পা ধড় ঘিরে চক্কোর কাটছে ২৫ বছর
হাড়ের রেলিঙ জাপ্টে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমারি চোটজখম আমারি রক্তমাংস
মলয়ের গায়ের চামড়া তুলে ফেলে তার ঘাঁতঘোতের আত্মাভিমানী ফ্রেস্কো দেখতে পাচ্ছি
শরীরের ভেতরে চোলছে আয়ুহীন অন্তর্ঘাতী কার্যকলাপ
হেমোগ্লোবিনে টহলদার আঁধারের উস্কানিমূলক  কাজ চোলছে ফি-মিনিট
এখন চুপচাপ ভেবে দেখছি আমাকে নিয়ে কী করা যায়
বংশপরম্পরায় পেয়েছি ৬০০০ বছরের পালিশ-খাওয়া আপৎকালীন ক্রুরতা

উপরের স্তবকটিতে রয়েছে একাধিক বুদ্ধিদীপ্ত প্রতীক । একটি শব্দও অতিরিক্ত নয় । আট লক্ষ হাট করে খোলা দরজার ঘুম ছুটিয়ে নিরানব্বই কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার ঝড় ভেঙে পড়েছে, এবং তা কবিকে দিশাহীন করার ষড়যন্ত্র করছে । কবি জানেন কী ভয়ানক বিলম্বে আটক আজ মানবসম্পদায় । জীবনের মাত্র পঁচিশ বছরের অভিজ্ঞতায় কবি দেখেছেন কী ভাবে নরভোজী কাকেরা মাংসমজ্জা ছিঁড়ে-ছিঁড়ে কবির ও কবির মতো মানুষদের ত্বকে এঁকে দিয়েছে রক্তাক্ত ফ্রেস্কো । যাঁকে চিবিয়ে রক্তাক্ত করে গিলে ফেলা হয়েছে, সেই কবির আর কীই বা অবশিষ্ট থাকে ? সেই অহংকে কী নাম দেবেন যা নিজেকে বিলোপ করে উপস্হাপন করে ? রাজনৈতিক ও আদর্শবাদী তত্ত্ব যেগুলো মানুষের আত্মার ব্যবসা করে, তার সৌজন্যে পাওয়া ? সময়চিহ্ণ নেই ; এবং আঘাতপ্রাপ্ত মানুষটির অস্তিত্ব যখন পর্যবসিত এক দীর্ঘ আত্মসংলাপে, তখন কী করেই বা তা থাকবে ।

চামড়ার পুরোনো পলেস্তারা চেঁছে মানুষের বোধহীনতা আমি ফেলে দিচ্ছি
ভাত খেয়ে আঁচাবার পর পরিষ্কার নখগুলোকে কেমন মহানুভব মনে হচ্ছে
আমার হাড়ের ফাঁকফোকোরে গোঁত্তা মেরে উঠছে গরম গনগনে লু
আমার লাশ আগাগোড়া তল্লাস কোরে হৃৎপিণ্ড না পেয়ে মানুষেরা যে-যার ঘরে ফিরে যাচ্ছে
মানুষই মানুষকে শেখাচ্ছে খুন আর সেবা করার কায়দাকানুন
শরীর থেকে পড়ে-যাওয়া হাত-পা তুলে লাগিয়ে নিয়ে ফিরে যেতে হয়
দুপুরের লালচে হাওয়ায় আমি ২চোখ বুজে শুয়ে আছি
কাঁচা কয়লার গন্ধ ঘোঁট পাকিয়ে উঠছে দুঁদে অসংযমী শিরার ১৮নং টোটায়
আমার বাবা-মা’র ক্রোমোজোম আমাকে আমার দিকহীন খপ্পরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কিনা জানি না
ওফ
ব্রেনের ক্রুদ্ধ শাঁসের ভাপ থেকে রেটিনার ওপর রঙিন নাইট্রো সেলুলোজ ঝরে পড়ছে
সমবেদনাজ্ঞাপক চিঠির আড়ত গড়ে উঠছে আধভেজানো সদর দরোজার ভবিষ্যৎহীন চৌকাঠে
আখচার জং ধরে যাচ্ছে বহুব্যবহৃত মাংসপেশীতে
মাটির সঙ্গে ১যোগে গলে ঘাঁট হয়ে যাচ্ছে জ্ঞানী আর মূর্খের সমসত্য মড়া
বাইরে, ধৈর্যসহকারে, রাত্রির প্রহরী অন্ধকার । অন্তরজগতে মৃত্যুযুদ্ধে আক্রান্ত চিন্তাভারাক্রান্ত কবি নবাঞ্চলের অনুসন্ধান করে চলেছেন । চতুর্দিকব্যাপী স্তব্ধতার মাঝে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছেন তিনি । সারা শরীর জুড়ে সহ্য করছেন লুটেরাদের হাত, যারা তাঁকে আগাপাশতলা যাচাই করে যে যার বাসায় নিয়ে চলে যাচ্ছে তাঁর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ । আহা, যে যা চায় তাকে তা দেবার দায়িত্ব সম্পর্কে কবির কী অসাধারণ উক্তি ।
গর্ভের ফ্যাচাঙে ১টা কোরে কনভার্সান চার্ট নিয়ে ওৎ পেতে রয়েছেন প্রতিটি নারী
আমার ১ই শিরার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে গান্ধি আর আত্তিলার সমকেমিকাল রক্ত
কিছুই হল না আমার পৃথিবীরো কিছু হবে না শেষ ওব্দি
তেজারতি কার্বার করা হল না
হাওয়ায় ভাসমান গাছগাছালির বীজ আমার অনুর্বর ঘামের ওপর বসে ফ্যাঁকড়া ছড়াতে চাইছে
বুমঘাঙের আপেলবাগানে বসে ব্যর্থতার কথা ভেবেছি দুপুর রোদ্দুরে
শষ্যের শাঁসের হেঁসেলে ঢুকে-থাকা পোকার অলস আরামের খোঁজে ছুটোছুটি করা হল না আমার
নিজের শরীরের ভেতরদিকেই আজকাল থুতু ফেলছি আমি
আয়নার শঠ পারা থেকে খুঁটে তুলছি আমি আমার হি১স্র চোখমুখের আত্মত্রাণকারী ছাপছোপ
সকলেই যা যার কাজ গুছিয়ে ঘাটবাবুর সার্টিফিকেট নিতে চলে যাচ্ছে
আমারি মগজ থেকে বেরিয়ে ২০০০ শিকারী কুকুর আমাকে তাড়া কোরে ফির্ছে ২৫বছর
স্ত্রীলোকদের পায়ে-চলা গন্ধ শুঁকতে-শুঁকতে আমি এগিয়ে যাচ্ছি তাদের অ্যামেচার আস্তানার দিকে
অন্ধকার রাস্তার ওপর পায়ের শাদা ছাপ দেখে আমার বুক ছাঁৎ কোরে উঠেছিল
দেয়াল থেকে ঝুর্ঝুরে বালি খসে পড়ার শব্দে কাঁটা দিয়ে উঠতে চেয়েছে আমার ম্লান চামড়া
লোমের চিমনিগুলো দিয়ে ঠেলাঠেলি মেরে বেরিয়ে যাচ্ছে আমার সির্দাঁড়া পুড়ে যাওয়া ধোঁয়া
উইদের থুতু দিয়ে তৈরি মাটির শিরার মধ্যে দিয়ে কাঁচা মাংসের লাশ টেনে নিয়ে যাচ্ছে ডেঁয়ো পিঁপড়ের সার
গায়ে পড়া ঢেউদের সামুদ্রিক পাড় দিয়ে খালি পায়ে আমি চলে যাচ্ছি
শকুনদের বিমর্ষ আড্ডায়
আমি জেনেছি কাদ্যজিনিসের মধ্যেই ১সঙ্গে লুকিয়ে থাকে রক্ত আর পুঁজের অ্যাকালসেঁড়ে রং
আখের বিকারগ্রস্ত মেধা মাটি থেকে শুষে তোলে তরল পরোপকারী নোংরামি
আমার নোংরামি আমার ভালোবাসা আমার রক্ত
মেঘের পাশেপাশে উড়ে যায় ফেলে দেয়া রক্তমাখা ন্যাকড়া
হৃদযন্ত্রের আলতো কাঁপনে কেঁপে ওঠা নীলা’ত বাঁদিকের রুগ্ন স্তন আমার মনে পড়ছে এখল
মরবার দিন ওব্দি মুখ বুজে জীবনের লাথানি সয়ে যেতে হয়
এখন আমার ধনীদের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে যোগবিয়োগ চিহ্ণ আর কাঁটা-ভাঙা কম্পাস
মাটির ভেতর সিসের মগজে ওৎ পেতে আছে সংবাদপত্রিকার হ্যাঁ কিংবা না

প্রথম পঙক্তিটি কি সেক্সিস্ট ? হা হা, নারীবাদীরা উক্তিটিকে ছিঁড়ে খাবেন । কিন্তু না, একটু মনোযোগ দিয়ে পড়লে, স্পষ্ট হবে যে গর্ভের একাকীত্বে বোনা আছে স্বপ্নের বীজ, মঙ্গলময় পৃথিবী গড়ে তোলার প্রকল্প, কবির কল্পনায় গড়ে তোলা এক নতুন পৃথিবী । আপাতসরল পঙক্তির মাধ্যমে তিনি সুকৌশলে এবং সুন্দরভাবে কেলাসিত করেছেন কবির কোমল হৃদয়ানুভূতি । কিন্তু তিনি, প্রথম পাঠে নিষ্ঠুর মনে হলেও, ঘোষণা করেছেন — যেহেতু বিগত সময়ে কোনো কিছুই পরিবর্তিত হয়নি, সেহেতু কোনো কিছুর পরিবর্তন ঘটবে না ; তিনি তো মানুষের কঙ্কালস্তুপের উপর পাশা খেলার চাল দিচ্ছেন না, এবং সেই হস্তযুগল তাঁর নেই যদ্বারা তেজারতি কারবার করা যায় ।

তিনি অবগত যে বুকে হামাগুড়ি দেয়া কীটের মতো বিলাসিতা তাঁর শোভা পায় না ( কাফকার মেটামরফসিসের পোকার মতো ) , যে বিলাসিতায় কোনো আরামপ্রদ রান্নাঘরে ফলের শাঁষের বিছানায় হাত-পা ছড়িয়ে ঘুমানো যায় । যে বিলাসিতায় উনানের আগুন নেভে না । সোজা কথায়, যেখানে বৈভবের শেষ নেই ।

ক্ষুধা থেকে কবির পরিত্রাণ নেই; মনের ও শরীরের ক্ষুধা, মানবসত্তার ক্ষুধা, সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার ক্ষুধা । মস্তিষ্ক থেকে ছাড়া পেয়ে গেছে দুই হাজার হাউণ্ড, গন্ধানুসন্ধানে ব্যপৃত, লাথি খেয়ে চলেছে অবিরাম, হাপিত্যেশ করে তাকিয়ে আছে খাদ্যবস্তুর দিকে, এবং সব শেষে ক্লান্তি ঘিরে ধরেছে কবিকে, বব ডিলানের মতো, নীলার বাঁদিকের ক্যানসার আক্রান্ত স্তনের দিব্যদৃষ্টি, যে বুকে একদা কান পেতে কবি শুনেছিলেন জীবনের স্পন্দন । অসাধারণ, অসাধারণ ।

আমার পা বুঝতে পার্ছেনা যে আমিই  তাদের গতি আর দিক নয়ন্ত্রণ কোর্ছি
অফেরৎযোগ্য নারী নিয়ে আয়কর/শুল্ককর দিয়ে বুড়ো হয়ে যেতে হবে কিনা জানি না
নিজের সই জাল কোরে চালিয়ে দিলুম গোটা শীতকাল
চাইনি তবু জন্মালুম
জুতোর ফিতে না খুলেই এবার আমি জোনাকিহীন অন্ধকারে লাফিয়ে পড়তে চাই
সকলেই কালকের জন্য তৈরি হয়ে নিচ্ছে
কালকের জন্যেই আজ সন্ধেবেলা চোলছে জুতোর মমতাময় পালিশ
ঘোরালো রাস্তা চলে যায় মানুষের পায়ের কাছবরাবর ১দিন না ১দিন
দেবদারুর নতুন বাক্সে চড়ে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের লোভে দেশ-বিদেশের সীমান্ত ওব্দি চলে যায় গ্রিজমাখা ৩০৩ কার্তুজ
বুদ্ধের ২৫১০ বছর পর গান্ধিময়দানে পড়ে থাকে পুলিশ ও অপুলিশ মার্পিটের ১৯৬৫ মডেলের জুতোছাতা
কোকেন আর জাল টাকার আড়তে দেদার আরামে ১সঙ্গে শুয়ে থাকে ভারত আর চিনের নাগরিক
আমি অন্ধ ভিকিরির হাত থেকে ৫ পয়সার চাক্তি তুলে নিয়েছিলুম
আমি খইয়ের ভেতর থেকে কাড়াকাড়ি কোরে ছিনিয়ে নিয়েছি মড়ার দয়ালু পয়সা
সাঁতার না জেনেও নৌকোয় পার হয়েছি মরে যাবার ভয়
আমাকে ধিক্কার দেয়া যায় আমাকে উপেক্ষা করা যায় না

উপরের দুইটি পঙক্তি : “নিজের সই জাল কোরে চালিয়ে দিলুম” এবং “চাইনি তবু জন্মালুম”, পাঠককে নিমেষে হত্যা করে । বাইরে থুতু ফেলতে পারছেন না কবি, সেহেতু অন্তরজগতে ফেলছেন– এই চিত্রকল্পটি এত গভীর অর্থবহ ও ভয়াবহ যে সচরাচর এমন পাঠ-অভিজ্ঞতা পাঠকের হয় না । চতুর্দিকের অধঃপতনের মাঝে, ‘ভিখারির’ পয়সা চুরি করে-নেয়া ( আমরা সবাই কি খ্যাতি-ক্ষমতা-বৈভবের জন্য ভিক্ষা করে ফিরছি না ? ), শবের গাত্র থেকে লুটপাট   (মরে বেঁচে থাকা মানুষ ), এই আশায় যে ক্ষুধার সমুদ্র পারাপার সম্ভব । হ্যাঁ, পাঠক, আপনি ঠিকই পড়ছেন, এই কবিতাটি সুস্পষ্টভাবে জানাচ্ছে সেই ভয়ানক দিনগুলোয় কবি কী করেছিলেন কেন করেছিলেন । ইনিই মলয় রায়চৌধুরী, সমকালীন ভারতীয় সাহিত্যে ষাটের দশকে বাংলা ভাষায় হাংরি আন্দোলনের স্রষ্টাদের অন্যতম । উপরের শেষ পঙক্তি কবির সেই বছরগুলোয় সিলমোহর দেয় যে সময়ে তাঁর সৃজনকর্ম ( ‘প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার’ রচনার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল ) নিষিদ্ধ করার রব উঠেছিল, এবং তৎসত্ত্বেও আমরা উপেক্ষা করতে পারিনি তাঁকে । বাংলা আভাঁগার্দ সাহিত্যের একজন প্রধান সাহসী কবিকে জানাই আমার প্রণাম ।

( Non-Centrical Notes : Poem Review তে প্রকাশিত প্রবন্ধের বঙ্গানুবাদ । এপ্রিল ২০১০ )

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন