একটি পোস্টমডার্ন সনেট
যে ~ পো্স্টমডার্ন ~ নাতিদীর্ঘ ~ সনেট ~ যে
যে ~ হ্যাঁ, ভাবুন, ভাবুন, বলা হয়েছে ভাবতে, ভাবুন ~ যে
যে ~ আমি বটানিকালের বটগাছ যার গুঁড়ি খুঁজছেন ~ যে
যে ~ আমি বেসনে ফ্রাই বকফুলের বড়া বাসরঘরে খেয়েছিলেন ~ যে
যে ~ এ তো এখন বুড়ো কুমির, কামড়ে মাংস ছিঁড়ে খাবে এমন নয় ~ যে
যে ~ আমি কিউরিও-দোকানের দোয়াত, কলমে নিব চেরা ~ যে
যে ~ পিঁপড়ের মৃত্যুতে শোকসভায় কবিতাপাঠ হয় না ~ যে
যে ~ জজসাহেব তো মৃত্যুদণ্ড দিয়েই খালাস ~ যে
যে ~ ফাঁসুড়ে হিসেবে আমার নামডাকে কান দিলেন না ~ যে
যে ~ কাফকা ফ্রায়েড চিকেন আসলে কেএফসি ~ যে
যে ~ নদীর মৃত্যুতে পুরসভায় শোকসভা হয় না ~ যে
যে ~ খেয়েছে সে দুঃখের আরশোলার পেটে জন্মাবার ফলে ~ যে
যে ~ পাঁজর গোনার বয়সে পৌঁছোতে ~ হাঁপায় ~ যে
যে ~ কৌতূহল ~ আর কীই বা জাগাবে ~ যে
যে ~ প্রথমে সামনের পা তারপর পেছনের পা তুলে ধনুকের মতন ~ যে
যে ~ ঘোড়ার মৃত্যুতে সহিসের বাড়িতে শোকসভা ~ যে
যে ~ লাফ দিতে ~ পারবে না সেই কুচকুচে ঘোড়ার ঢঙে ~ যে
যে ~ নিজের ~ পাদপ্রদীপ নিয়ে উড়তে থাকে ~ যে
যে ~ খুরে-খুরে গড় শুনে টের পায় না গাধা গোরু মোষ ঘোড়া ~ যে
যে ~ জীবনে জেব্রার পিঠে চেপে ~ হায়েনার কান্না এড়িয়েছিল ~ যে
যে ~ বাতি আর আগুন নেভানোর সঙ্কটধ্বনির মানে না-বুঝে ~ যে
যে ~ সুমিষ্ট আর সুগন্ধ ভোজনের সবুজ ঘাস খেয়ে ভাবছিল ~ যে
যে ~ ভেবে ভেবে ~ ভবিদের ভোলানো গেল না ~ যে
যে ~ বীর সিংহের কোমরবন্ধে ঝোলানো খাপে ~ যে
যে ~ বাতাসের মৃত্যুতে উড়োজাহাজের শোকসভা ~ যে
যে ~ টেস্টটিউব খোকাখুকুদের জগতসংসারের নোংরামি থেকে ~ যে
যে ~ বাঁচাতে চেয়েছিল ~ উপায় নেই বলে ~ যে
যে ~ মহৎ মানুষ কেবল নিজের কাজের জন্যই জন্মায় ~ যে
যে ~ নিরো কিংবা নিরোনীর হুমকিতে কুঁকড়ে যেতে বাধ্য ~ যে
যে ~ শিল্পী মাত্রেই ~ উন্নতমানের ঝাড়ুদার ~ যে
যে ~ শব্দের পেটে কপচানি ঢুকিয়ে ভয় দেখাতে পারে ~ যে
যে ~ পিতৃতন্ত্র আর মাতৃতন্ত্র লোপাট হয়ে হিজড়েতন্ত্রের বোদ্ধা ~ যে
যে ~ বইয়ের পাতায় দরোজাগুলোয় উই ধরায় ~ যে
যে ~ বনলতা সেনের চেয়ে জাঁ দুভালের পালতোলা টান ~ যে
যে ~ আবসাঁথ না পেলে আর কোনোদিন মদ ছোঁবো না ভাবতেই ~ যে
যে ~ কিসের লোভে কার্ডধারীরা মুখ বুজে সবকিছু মেনে নিতো ~ যে
যে ~ নদীর মিল্কশেক জল চটচটে হয়ে যেতে থাকে ~ যে
যে ~ দেশ মরলে রাজনীতিকদের আনন্দসভা ~ যে
যে ~ বৃষ্টিতে ~ যে ~ টেলিফোন বুথের প্রাগৈতিহাসিক স্মৃতি ~ যে
যে ~ কাগজের কাপে ব্যথার জীবানু ~ চুমুক দিই ~ যে
যে ~ রবিশংকরে শ্রীশ্রী যোগ করে দেখি বীণা বিয়োগ ~ টাকা ~ যে
যে ~ টুথপেস্টগুলোয় ভ্যানগঘের রঙে দাঁত মাজার ~ যে
যে ~ সব্যসাচী নাম হলেও অর্জুন নয় ~ সাক্ষাৎ বকাসুর ~ যে
যে ~ রক্তমাংসের ধুমকেতু ভোটে জিতলে বাজি পোড়ে ~ যে
যে ~ এই বছর প্রতিটি মাসই বৈশাখ ~ পাঁজি ~ দেখতে ~ যে
যে ~ ফুলশয্যার অ্যামেচার প্রেমিক ~ হটেনটট ভেনাস ~ যে
যে ~ পেছন থেকে চোখ টিপে-ধরা রাষ্ট্রের হাত ~ যে
যে ~ কাক মরলে কাকেদের শোকসভায় বিরক্তি ~ যে
যে ~ প্রেমিকার অপেক্ষায় ছুরিতে শান দিয়ে রান্নাঘরে ~ যে
যে ~ ভিতুদের পুরস্কৃত করার প্রকল্পে ~ কাকাতুয়া ~ যে
যে ~ মুখ থুবড়ে পড়ার মেটাফর ~ হামিংবার্ড ~ টুনটুনি নয় ~ যে
যে ~ মানুষের মৃত্যুতে কেউ শোকসভা কেউ মজাসভা ~ যে
যে ~ যে ~ যে ~ যে ~ যেমন চলছে তেমন চলুক ~ যে ~ যে
এ-৪ মাপের কাগজে
এ-৪ মাপের কাগজের একেবারে মাঝখানে ইন্সপেক্টর অ. ব্যা.
লিখে রেখেছিলেন, “আমার মৃত্যুর জন্য কেহ…….”
ডাকসাইটে ইন্সপেক্টর বলে বেশিদিন একই পুলিশ স্টেশনে
টিকতেন না
অ. ব্যা. ছিলেন যাকে ভালো বাংলায় বলে অকৃতদার, মানে
যিশুখৃষ্ট টাইপ নয়, চলতি বাংলায় যাকে বলে লুচ্চা
এ-৪ কাগজের পেছনে খুদেখুদে অক্ষরে দেড়-হাজার নাম লেখা ছিল
মেয়েদের নাম, কিন্তু অনুসন্ধানকারী কমিশনার শ. চ্যা.
হদিশ পাচ্ছিলেন না নামগুলোর মালকিনি কারা
অ্যাসিসস্ট্যান্ট ইন্সপেকটরের মতে এই মেয়েগুলোই অ. ব্যা-কে
খুন করেছে, কিন্তু কেন লেখা, “আমার মৃত্যুর জন্য কেহ…”
যতোগুলো থানায় ইন্সপেক্টর অ. ব্যা-এর পোস্টিঙ হয়েছে
কন্সটেবলরা জানতো উনি প্রতিদিন সকালে গায়ত্রীমন্তর
গুজগুজ করে পড়েন
অথচ ইন্সপেক্টর অ. ব্যা-এর বাড়িতে পুজোর ঘর পাওয়া যায়নি
গঙ্গাজল পাওয়া যায়নি, পাঁজিও না
কিন্তু একটা ঘরে রঙিন ফোলানো গ্যাস-ভরা কনডোম পাওয়া
গেছে, সেই ঘরে তারা নিজের ইচ্ছেয় উড়ছিল
বেলুন ফোলাবার সিলিণ্ডারও পাওয়া গেছে, ঘরের ভেতরে ঢুকে
কমিশনার সায়ের লাফিয়ে লাফিয়ে যতোই অন্তত একটা
কনডোমকে নাগালে আনার চেষ্টা করেন, সেগুলো পালিয়ে
সিলিঙে গিয়ে ফিকফিকিয়ে হাসে
মেঝেয় খুঁজে পান একটা গ্যাস-ফুরোনো কনডোম তাতে কালি ওঠে না
এরকম রঙ দিয়ে একজন মেয়ের নাম লেখা
মেয়েটি কে মেয়েটি কে মেয়েটি কে মেয়েটি কে মেয়েটি কে মেয়েটি
যে কে তা একজন কন্সটেবল বলতে পারল
“হুজুর ও তো বেপাড়ার, এ-৪ কাগজে যতো নাম আছে সবই তার মানে
বেপাড়ার”
এ-৪ তালিকা নিয়ে অ. ব্যা-এর পোস্টিঙের শহরে বেপাড়ায় ঢুঁ মেরে
কমিশনার শ. চ্যা. বিশেষকিছু জানতে পারলেন না
তিনি তো আর খদ্দের হয়ে জাননি, পুলিশ হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁকে দেখে
মেয়েরা নিজের অন্য নাম বলেছে, কেননা রোজ সন্ধ্যায় ওদের
নামবদল হয়
শেষকালে অ.ব্যা. সম্পর্কে গুজবই কাজে দিল । অ. ব্যা, গায়ত্রীমন্তর
পড়ার সময়ে রগের ওপরে পিস্তলের নল ঠেকিয়ে পড়তেন
তিনি মনে করতেন যে যদি বেপাড়ায় যাওয়া পাপই হয় তাহলে
৯ এমএম গুলি তাঁর মগজ ফুঁড়ে বেরিয়ে যাবে
তবু তেমন সুরাহা হল না কেননা পিস্তলের ট্রিগারে কারোর
আঙুলের ছাপ পাওয়া গেল না । শ. চ্যা. ফাইলে লিখলেন
“কেস ক্লোজড; কনডোমগুলো ভালো কোম্পানির । ৩৫৯৭টা
কনডোম । অফিসারের ভবিষ্যৎ উজ্জল ছিল । মরণোত্তর
সম্বর্ধনা দেয়া হউক ।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন