প্রদীপ চৌধুরী : শঙ্খ ঘোষ-এর হাংরি আন্দোলন সম্পর্কে ‘শব্দ ও সত্য’ নিয়ে একটি খোলা চিঠি
‘শব্দ ও গোপন সত্য’ ( অথবা কলিংবেল যাদের আতঙ্কিত করে )
শঙ্খবাবু, ‘ক্ষুধার্ত’র বর্তমান সংকলনে প্রকাশিত আপনার ‘শব্দ ও সত্য’ সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে । হা, খোলা চিঠি হিসেবেই এটা আপনার লেখার পাশে ছাপা হওয়া দরকার। দীর্ঘদিন, প্রফেসর ও কবি-ইনটেলেকচুয়াল, আপনার সুনামের কথা শুনে আসছি । মনে হয় এখন প্রকৃতই সময় হয়েছে-- আপনার বাক্য ও রচনার স্ববিরোধীতা, আপনার মিডিওক্র্যাসি, আত্মাহীন আপনার অস্তিত্ব ( আমি অবশ্যই খাবার টেবিলের কথা বলছি না ) ও পদ্যরচনা --- এসব সম্পর্কে পাঠক/জনগণের দৃষ্টি পরিষ্কার হওয়া দরকার । তাছাড়া আপনার নিজেরও লাভ হতে পারে । হাংরিদের সঙ্গে তো আপনার কিছু-কিছু যোগাযোগ আছেই । কিন্তু ওই যোগাযোগ যাতে সময় ও সীমা না ছাড়িয়ে যায় এ ব্যাপারে আপনার সচেতন থাকা দরকার।
আমি না ধরিয়ে দিলেও অধিকাংশ পাঠকই আপনার রচনাটির স্ববিরোধীতা ধরে ফেলতে পারবেন মনে হয় । ধরে ফেলতে পারবেন, আসলে এই প্রবন্ধ আপনি কোনো জাগ্রত অবস্হা থেকে লেখেননি, আপনার ‘কবি’ চরিত্রে যে আশঙ্কা, সতর্কতা, তারই টানাপোড়েন আপনাকে এ-প্রবন্ধ লিখতে প্ররোচিত করেছে । আপনার ক্ষমাহীন অবচেতনা আপনাকে গোপনে আদেশ করেছে ‘শব্দ ও সত্যে’র মারাত্মক ঝুঁকি নিতে । কবি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে আপনি যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছেন তার ভয়াবহতা সম্পর্কে অর্ধসচতন বলেই অন্তত দুদি থেকে আক্রান্ত হয়ে এ-লেখা লিখেছেন । তাই নয় ?
হাংরি লেখালিখি সম্পর্কে শিক্ষিত আলোচনা করতে গিয়ে আপনি উগ্রপন্হী আন্দোলনের সঙ্গে হাংরি আন্দোলনের যে সব অ্যানালজি টেনেছেন, সেগুলি আমাদের লেখালিখি সম্পর্কে আপনার অজ্ঞতাই প্রমাণ করে । সন্দেহ নেই, সমাজ ও সভ্যতার বিষাক্ত সাইরেন আমাদের হাড়ও কাঁপিয়ে তোলে, এবং এই অবয়বহীন শহরেই বসবাস আমাদের -- কিন্তু আপনি কী করে ভুলে গেলেন এরই সঙ্গে মাখামাখি আমাদের ব্যক্তিগত সম ও অসমকামী নানা ধরনের ভিশান, ব্যক্তিগত ঐশী জীবনের বিষণ্ণতা, আনন্দ ও সন্ত্রাস-স্বপ্ন ? এটাকে কোনো একমুখি রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে একই কম্পার্টমেন্টে আপনি কিছুতেই ঢোকাতে পারেন না । আপনার এই স্হূল ‘অ্যাপ্রোচ’ হাংরি জেনারেশনের বিশাল আগ্রাস সম্পর্কে যথেষ্ট নয় মনে হয় । ওই একই ভুল দেখতে পাই ( এই ইস্যুরই অন্য একটি আলোচনায় ) দেবেশ রায়ও করেছেন । তিনিও হাংরি উথ্থানের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে উগ্রপন্হী আন্দোলনের তুলনা করেছেন । উদ্দেশ্য, একই দুজনের -- হাংরিদের সম্পর্কে নিজেদের অর্ধচেতন এটিচ্যুডকে প্রমাণ করা ।
উগ্রপন্হীদের মতোই খেয়োখেয়ির মধ্যে হাংরি জেনারেশন ভেঙে যাচ্ছে -- কোনো সাহিত্য আন্দোলন সম্পর্কে এধরনের জেনারালাইজেশনও খুবই স্হূল নয় কি ? শুনেছি উগ্রপন্হীদের কোর্ট মার্শাল সিস্টেম আছে ; কোনো সিস্টেমই পাকস্হলীতে আমাদের ঢোকাতে পেরেছে কি ? না, লেখকদের মধ্যে এধরনের কোনো আদেশনামা থাকে না । আমরা কোনো ‘রিক্রুটমেন্টে’ বিশ্বাস করি না । কাজেই হাংরি জেনারেশনের যে split-এর কথা আপনি বলতে চেয়েছেন , তা একান্তভাবেই আপনার ভুল এনালজিকে প্রতিষ্ঠা করার সুশিক্ষিত কৌশল মাত্র। ‘কৃত্তিবাস’ বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান ( হা, ‘কৃত্তিবাস’কে একধরনের প্রতিষ্ঠান বলেই মনে হয় ) এবং আমরা যেকোনো প্রতিষ্ঠানেরই বাইরে ) সম্পর্কে লিখতে গিয়ে “সঙ্ঘ ভেঙে” যাবার যে কথা আপনি বলেন, হাংরি জেনারেশন সম্পর্কে আপনি তা তো বলতে পারেন না শঙ্খ ।
ভুলে যাবেন না, বিনা চিঠিতেই দেখা হয়েছিল আমাদের -- এবং দেখা হবার সঙ্গে-সঙ্গেই শুরু হয়, সারাজীবনের শেষহীন ঘষাঘষি । আত্মা আমাদের জাগ্রতই ছিল, অপেক্ষা ছিল মাত্র কলোকেশনের। আমাদের মধ্যে কোনো split কোনো দিনই হয় না, split -- ঘৃণা ও আক্রোশ যা থেকে জেগে ওঠে । যদি কেউ সরে যায়, তার সরে যাবার কথা আমরা জানতে পারি অনেক পরে । এবং একসময় হয়তো বিভিন্ন স্তরগুলি উল্লেখ করি আমরা। যেমন মলয় । মলয়ের মৃত্যু সম্পর্কে শৈলেশ্বরের ঘোষণার আগেই কিন্তু সে সরে গিয়েছিল আমাদের কাছ থেকে। তারপর একদিন শুধু ব্যাপারটা যে প্রকৃতই এরকম তা আবিষ্কৃত হয়ে যায় । এবং এই চলে যাওয়ার কোনো Negative force নেই । এটা মৃত্যুর মতোই এক স্হির সত্য --- পজেটিভ নেগেটিভের যাবতীয় সিদ্ধান্ত থেকে চ্যুত এক মর ঘটনা ।
কাজেই ( ধরা যাক একজন গোপন বিপ্লবী হিসেবে ) আপনার সমর্থন যতোই উগ্রপন্হীদের স্বপক্ষে থাকুক না কেন, সেই অবসেশন থেকে যদি হাংরিদের দেখতে যান তাহলে খুবই ভুল হয়ে যাবে । এধরনের তুলনা এনে আপনার বক্তব্যকে ( ভুল ফ্যালাসি ) প্রমাণ করা কি একধরনের সৌখিনতা নয় ? পাঠকদের এভাবে বিভ্রান্ত করছেন কেন ? দেখলাম ‘নিষাদ’ কাগজে উৎপলকুমার বসুও এক উগ্রপন্হী বিস্ফোরণ করেছেন । অথচ নিজে তো লণ্ডনে বসে গাড়ি-বাড়ি কাঁটাচামচ, ফ্রিজ-টেলিভিশনে কেবল হলিউডেরই দিবাস্বপ্ন দেখে যাচ্ছেন । উৎপলকুমার বসু একজন হলিউড গেরিলা, এরকম মনে হয় ।
আমরা ইউনিকর্ন নই । আমাদের পরিণতি কোনো কমিটমেন্টের সঙ্গে যুক্ত নয় । আপনি সার্ত্র এবং সুররিয়ালিস্ট এমনকি গীন্সবার্গের কবিতা আমাদের লেখার পাশাপাশি রেখে পড়েন । একদিন কমিটমেন্টের এই প্রশ্ন থেকে সুররিয়ালিজম ভেঙে গিয়েছিল । অসহায় ননকমিটেড আর্তোকে এক নির্মম নাটকের নায়ক হয়ে কাটাতে হয়েছিল বছরের পর বছর পাগলাগারদে । আর সমগ্র প্যারিসময় নিন্দা, অপপ্রচার, এসব করে ব্রেতোঁগোষ্ঠী আর্তোর একটা বালও কাঁপাতে পেরেছিল কি ?
আমরা কমিটেড নই, কিন্তু আর্তোর মতো উদ্ধারহীন এবং সাবজেকটিভও নই । জীবন ও সভ্যতার প্রত্যেক শিরা-উপশিরার সঙ্গে অবশ্যই আমরা যুক্ত, ( বলার যা অপেক্ষা রাখে না ) এটাকে এক ধরনের engagement বলতে পারেন, জরায়ুর সঙ্গে শিশুর যে ধরনের engagement ; Blake , Baudelaire জীবনানন্দ থেকে আপনি পর্যন্ত --- আপনারা সকলেই শহরের অলিতে-গলিতে প্রচুর ঘোরাঘুরি করলেন । এর রঙ্গমঞ্চ, সুপারমার্কেট, নেপথালিন দেওয়া মূত্রাগারগুলি ব্যবহার করলেন । কিন্তু কিছুতেই মাঝরাতে এসপ্ল্যানেডের পিচের ওপর আছড়ে পড়ে চুমু খেতে পারলেন না এর ভালোবাসাহীন আত্মাকে । আপনারা কবি, তাই শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত চেয়ারগুলিই অধিকার করে নিলো আপনাদের ।
ব্রথেল/হেভেন এ শহর আমাদের কাছেই প্রথম তার অচরিতার্থ ভালোবাসা ফিরে পেলো ( শহরের প্রতিটি লোকই হয়তো এজন্যেই আজ আমাদের পাঠক ) হাংরি লেখা না হলে এ শহর বা শহরবাসী কারোরই অর্গাজম হয় না আর ।
‘স্বকাল’-এর আত্মবিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে আপনি যেসব point উল্লেখ করেছেন সেগুলি সত্যি আমাদের কাছে খুবই হাস্যকর বলে মনে হয়েছে ( হয়তো জানতেন আপনিও তাই একটু ‘ইয়ে’ করে শুরু করেছেন ) । মোটা রুলের ভেতর সুবো ও ফালগুনির সম্পর্কে যা লেখা হয়েছিল সেখানে আপনার অনধিকার venture ঘটেছে । আমরা তো আত্মবিজ্ঞাপনগুলি এভাবেই করে থাকি । এভাবে করেই সুখ আমাদের । তাছাড়া গত সাত বছর ধরে আমাদের উপর যে কতো ধরনের প্রেশার কতো রকম চেহারায় এসেছে তা কি আপনি জানেন না ? কিন্তু আমরা যে এসবকে একেবারেই গ্রাহ্য করি না তা বোঝাবার জন্যই হয়তো নিজেদের পরিবর্তে স্পাইকসহ বুট কখনো কখনো ছাপি । এটা যে আমাদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রবণতা থেকে জেগে ওঠেনি তার সবচেয়ে বড়ো প্রমাণ আমাদের লেখালিখি । জানেন আপনি তাই লেখালিখি থেকে এটা প্রমাণ করার অপচেষ্টা করেননি ।
তাছাড়া সুবো সম্পর্কে আপনার কোটেশানটা কি অত্যন্ত মোটিভেটেড নয় ? তা না হলে যতোটা হলে একটা সম্পূর্ণ কোটেশান হতে পারতো ততোটা ‘কোট’ কেন করেননি ?
১. “ওর ভাষা অনুভূতি থেকে প্রত্যক্ষভাবে জাত । একই সঙ্গে ইডেনের সাপ ও প্যারাডাইসের asphodel ! আমাদের সকলের লেখার মতো ওর লেখাতেও neo-metaphysical tone খুবই প্রবল । ‘বিষকবিতার’ অভ্যূথ্থান ওর ভাষায় । ওর শব্দের প্রভাব আমাদের আত্মাণ এতো প্রবল যে, ধরুন, যদি পথের পাশে কোনো পাঁড় মাতাল কিংবা অসহায় শিশু মুমূর্ষু পড়ে থাকে --- তাকে ‘কোরামিন’ বা ‘সেলাইন’ বা ‘অক্সিজেন’ না দিয়ে সূক্ষ্ম সিরিঞ্জে সুবোর কবিতা ইনজেক্ট করে দিন -- দেখবেন, মানব-সভ্যতা ও আমাদের এই শহরে রৌদ্রে ঝলমল করে উঠবে ।”
২. “ওর ভাষা অনুভূতি থেকে প্রত্যক্ষভাবে জাত --- একই সঙ্গে ইডেনের সাপ ও প্যারাডাইসের asphodel...যদি পথের পাশে কোনো পাঁড় মাতাল কিংবা অসহায় শিশু মুমূর্ষু পড়ে থাকে তাকে কোরামাইন বা সেলাইন বা অক্সিজেন না দিয়ে খুব সূক্ষ্ম সিরিঞ্জে সুবোর কবিতা ইনজেক্ট করে দিন, দেখবেন মানবসভ্যতা ও আমাদের এই শহর রৌদ্রে ঝলমল করে উঠবে।”
দুটোর অর্থ কি আপনার কাছে একই মনে হচ্ছে শঙ্খ ? আর, এর মধ্যে যা ছিল সেগুলি বাদ দেয়ারই বা মানে কী? শঙ্খ, আপনি যতোটা চতুর, আপনার বৈদগ্ধ ঠিক ততোটা নয় বলেই মনে হয় । মনে রাখুন আরও, বিজ্ঞাপনের মূল তিনটি উদ্দেশ্য --- কমার্স, করাপশান এবং ডিহিউম্যানাইজেশন -- আমরা এদের কোনোটাকেই প্রশ্রয় দিতে পারি না --- আমাদের প্রতিটি বিজ্ঞাপনেই বিজ্ঞাপিতকে ততোটা stake করা হয়, যতোটা না হলে ওই বদগুণগুলি থেকে ত্রাণ পাওয়া যায় না । আমাদের বিজ্ঞাপনের ভাষা আমাদের নিজেদেরই ভাষা ।
“আকর্ষণীয় কভার ! নতুন ধরনের সব অসাধারণ লেখা”, আপনার কাছে এটাকে উল্টোরথের বিজ্ঞাপনের মতো ( বিভ্রান্তিকর ) কেন মনে হলো বোঝা গেল না । ‘স্বকালের’ কভার কি সত্যিই আকর্ষণীয় নয় ? কভারটা যখন সত্যি আকর্ষণীয় তখন তাকে আকর্ষণীয় বলাই তো সঙ্গত । কিংবা অসাধারণ লেখাগুলিকে । উল্টোরথের সঙ্গে তুলনার ব্যাপারটাকেই বরং আপনার “নির্মম স্মার্টনেস” মনে হয় । এবং খুব ক্লিশে । পরিষ্কার ? ‘উল্টোরথ’ ইত্যাদির বিজ্ঞাপনের সঙ্গে ‘স্বকালকে’ জড়িয়ে এধরনের Scandal সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা আপনার ‘শব্দ ও সত্য’র জঘন্যতম দিক বলে আমার মনে হয়েছে ।
আর লেখালিখি সম্পর্কে লিখতে গিয়ে লেখা বাদ দিয়ে এই বিজ্ঞাপন প্রণয় আপনাকে কেন আবদ্ধ করলো বুঝতে পারলাম না । দেখুন কীরকম ‘স্ববিরোধ’ আপনার ! আপনি আমাদের আত্মবিজ্ঞাপনগুলি গবেষণা করে আতঙ্কিত হলেন ( ভালো কথা ), আবার ফালগুনি সম্পর্কে বলছেন, বাইরের আচরণ নয়, লেখালিখি থেকেই তার তিতিক্ষা স্পষ্ট হয়ে উঠবে । এধরনের চিন্তা কি অস্বচ্ছ ও ডুয়ালিস্টিক নয় ? আপনার মতো ম্যাচিওর লোকের এধরনের ভুলগুলি কেন ? আপনার মিডিওক্র্যাসি এবং প্রতারণা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন শৈলেশ্বরের কবিতার দার্শনিকতা সম্পর্কে আলোচনা করেন আপনি -- যখন দেখি দার্শনিকতাই পরিণত হাংরি কবিতার লক্ষণ বলে আপনি নে করেন । কষ্ট হয়, যখন আমস্তকলিঙ্গ পা ছুটতে ছুটতে লক্ষ্যের প্রায় কাছাকাছি এসে, সেই গভীর তলার দিকে তাকিয়ে, ফিরে যেতে দেখি আপনাকে --- কোথায় যাবেন জানেন না, হয়তো ঘরেও ফেরা সম্ভব নয় আর -- চোখে পড়ে তৃতীয় কোনো ভুল রাস্তায় আপনার বিপন্ন প্রস্হান ।
আপনার কতকগুলি ক্লিশে, যেমন, “আত্মদিগন্ত ধরতে পেরেছিলেন”, “যতোটা বা নিষ্ফল বিস্তারের ইশারা ছিল”, এসব এক্সপ্রেশন কি সত্যি আজ আর কিছি ‘কনভে’ করতে পারে ? আমার তো মনে হয় শৈলেশ্বরের ‘জন্মনিয়ন্ত্রণ’ অত্যন্ত সরাসরি ধরনের কবিতার বই । আপনার মেরুদন্ড শক্ত হলে নিশ্চয়ই এতে “নিষ্ফল ইশারা” ( What does it mean actually ? ) দেখতে পেতেন না ।
আপনি আসলে হাংরি কবিতা এখনও বুঝতে পারেননি । তাই ‘শব্দ ও সত্য’র প্রথম অংশে আপনার যেসব আপাত-সত্য ভাষণ, আলোচনা ও উক্তি রয়েছে আপনি তাদের দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত বহন করতে পারেননি, তাই দ্বিতীয় অংশে ‘ঐতিহাসিক ফ্যালাসি’, অকারণ অসূয়া এবং উপদেশ ( যা শুনলেই বমি আসে ) -- এসবের মাধ্যমে প্রথম অংশের স্বীকারোক্তিগুলিকে নষ্ট করে পুনরায় সেইসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে খুশি করার চেষ্টা করেছেন, যাদের জন্য আপনি প্রকৃতপক্ষে নির্দিষ্ট ।
এতসবের পর বুদ্ধদেব বসু সহ ( সরাসরি নাম উল্লেখ করেননি ) সিমলা সন্মেলন ইত্যাদিকে আপনার গালাগাল হাংরি লেখার প্রশস্তি এবং শৈলেশ্বরের কবিতায় দার্শনিকতা আবিষ্কার --- নিতান্তই এক ধরনের হাস্যকর smartness বলে ভাবতে বাধ্য হই । আপনি আসলে মিডিওক্র্যাসিরই ব্যাকড্রপ ।
আপনি শব্দ ও সত্যের খথা লিখতে চেয়েছেন । কিন্তু শব্দের গোপন সত্যের কথা ভেবেছেন কখনো ?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন